ঢাকা ০৪:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চশমা পরা বিরল বানরের সন্ধান মিলল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:২২:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ নভেম্বর ২০২০
  • ১৭১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বে বিভিন্ন সময় গবেষকদের কল্যাণে পাওয়া যায় বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের খোঁজ। তেমনই এবার খোঁজ মিলেছে নতুন এক প্রজাতির বানরের। বুনো বানরের মল-মূত্র থেকে পাওয়া ডিএনএ বিশ্লেষণ করে তারা এই প্রাজাতির বানর পান।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় ১৯ প্রজাতির বানর রয়েছে। তবে এবার মিয়ানমারের একটি প্রত্যন্ত জঙ্গলে নতুন একটি বানর পাওয়া গেছে, যার সম্পর্কে এতদিন বিজ্ঞানীদের কিছুই জানা ছিল না। পোপা পর্বতের নামানুসারে বানরটির নামকরণ করা হয়েছে পোপা লাঙ্গুর। তবে এই প্রাণীটি এর মধ্যেই বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। কারণ এই প্রজাতির সদস্য রয়েছে মাত্র ২০০টির মত।

দলবদ্ধ ভাবে একসঙ্গে এরা বসবাস করে

দলবদ্ধ ভাবে একসঙ্গে এরা বসবাস করে

লাঙ্গুর নামের বানরের এই প্রজাতিটি গাছের পাতা খায়। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় এদের দেখা মেলে। এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, এদের চোখে চশমাসদৃশ গাঢ় বর্ণের বৃত্তাকার রিং রয়েছে, যা আলাদা করে যে কারো চোখে পড়ে। আর এর গায়ের পশমের বর্ণ ধূসর। তবে বানরের বাচ্চার গায়ের পশম প্রথমে হলদেটে থাকে। এরপর ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে পশম কালো এবং ধূসর বর্ণ ধারণ করতে থাকে।

জিন গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীতে ১০ লাখ বছর আগে যেসব বানর ছিল বলে গবেষণায় জানা গেছে, তাদের চেয়ে এই পোপা লাঙ্গুর বানরের প্রজাতি আলাদা। আবাসস্থল ক্ষতি এবং শিকারের কারণে বানরের এই প্রজাতিটি বিলুপ্তির ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

লাঙ্গুর নামের এই বানর গাছের পাতা খায়

লাঙ্গুর নামের এই বানর গাছের পাতা খায়

বুনো বানরের মল-মূত্র থেকে পাওয়া ডিএনএ বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা অনেকদিন ধরেই ধারণা করছিলেন যে, মিয়ানমারে বানরের নতুন প্রজাতি রয়েছে। তবে এতদিন ধরে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় তারা লন্ডন, লেইডেন, নিউইয়র্ক এবং সিঙ্গাপুরের প্রাকৃতিক ইতিহাসের জাদুঘরগুলোয় থাকা বানরের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে শুরু করেন।

গাছের ডালে বসে আছে একটি ছোট্ট লাঙ্গুর

গাছের ডালে বসে আছে একটি ছোট্ট লাঙ্গুর

মিয়ানমারে প্রথমদিকের অভিযাত্রীরা এসব নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন, কিন্তু যেগুলো তেমনভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়নি। সেই নমুনা থেকে পাওয়া ডিএনএ বুনো বানরের সঙ্গে যাচাই করে দেখার পর নতুন এই প্রজাতিটি শনাক্ত করেন বিজ্ঞানীরা।

সম্প্রতি মিয়ানমারের এক জঙ্গলে দেখা মিলেছে এই প্রজাতির বানরের

সম্প্রতি মিয়ানমারের এক জঙ্গলে দেখা মিলেছে এই প্রজাতির বানরের

মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলের জঙ্গলে পোপা লাঙ্গুরের এই প্রজাতিটি পাওয়া গেছে। পোপা পর্বতের তীর্থস্থানগুলোর কাছাকাছি অভয়ারণ্যে এদের বেশিরভাগ বসবাস করে। সংরক্ষণবাদী গ্রুপ ফনা অ্যান্ড ফ্লোরা ইন্টারন্যাশনালের ফ্রাঙ্ক মোমবার্গ বলেছেন, বৈজ্ঞানিকভাবে এই বিশ্লেষণ বানরটির সুরক্ষায় কাজে আসবে।

তিনি বিবিসি নিউজকে বলেছেন, সদ্য আবিষ্কৃত পোপা লাঙ্গুর এর মধ্যেই চরম বিপন্ন এবং বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা একটি প্রাণী। সুতরাং তাদের মধ্যে যেগুলো এখনো বেঁচে আছে, সেগুলো রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর নিরাপত্তায় স্থানীয় কমিউনিটির পাশাপাশি প্রাইভেট সেক্টরের সহায়তাও নিতে হবে। এখন এই প্রজাতির ২০০ থেকে ২৫০ প্রাণী বেঁচে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চশমা পরা বিরল বানরের সন্ধান মিলল

আপডেট টাইম : ০৭:২২:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ নভেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বে বিভিন্ন সময় গবেষকদের কল্যাণে পাওয়া যায় বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের খোঁজ। তেমনই এবার খোঁজ মিলেছে নতুন এক প্রজাতির বানরের। বুনো বানরের মল-মূত্র থেকে পাওয়া ডিএনএ বিশ্লেষণ করে তারা এই প্রাজাতির বানর পান।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় ১৯ প্রজাতির বানর রয়েছে। তবে এবার মিয়ানমারের একটি প্রত্যন্ত জঙ্গলে নতুন একটি বানর পাওয়া গেছে, যার সম্পর্কে এতদিন বিজ্ঞানীদের কিছুই জানা ছিল না। পোপা পর্বতের নামানুসারে বানরটির নামকরণ করা হয়েছে পোপা লাঙ্গুর। তবে এই প্রাণীটি এর মধ্যেই বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। কারণ এই প্রজাতির সদস্য রয়েছে মাত্র ২০০টির মত।

দলবদ্ধ ভাবে একসঙ্গে এরা বসবাস করে

দলবদ্ধ ভাবে একসঙ্গে এরা বসবাস করে

লাঙ্গুর নামের বানরের এই প্রজাতিটি গাছের পাতা খায়। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় এদের দেখা মেলে। এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, এদের চোখে চশমাসদৃশ গাঢ় বর্ণের বৃত্তাকার রিং রয়েছে, যা আলাদা করে যে কারো চোখে পড়ে। আর এর গায়ের পশমের বর্ণ ধূসর। তবে বানরের বাচ্চার গায়ের পশম প্রথমে হলদেটে থাকে। এরপর ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে পশম কালো এবং ধূসর বর্ণ ধারণ করতে থাকে।

জিন গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীতে ১০ লাখ বছর আগে যেসব বানর ছিল বলে গবেষণায় জানা গেছে, তাদের চেয়ে এই পোপা লাঙ্গুর বানরের প্রজাতি আলাদা। আবাসস্থল ক্ষতি এবং শিকারের কারণে বানরের এই প্রজাতিটি বিলুপ্তির ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

লাঙ্গুর নামের এই বানর গাছের পাতা খায়

লাঙ্গুর নামের এই বানর গাছের পাতা খায়

বুনো বানরের মল-মূত্র থেকে পাওয়া ডিএনএ বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা অনেকদিন ধরেই ধারণা করছিলেন যে, মিয়ানমারে বানরের নতুন প্রজাতি রয়েছে। তবে এতদিন ধরে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় তারা লন্ডন, লেইডেন, নিউইয়র্ক এবং সিঙ্গাপুরের প্রাকৃতিক ইতিহাসের জাদুঘরগুলোয় থাকা বানরের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে শুরু করেন।

গাছের ডালে বসে আছে একটি ছোট্ট লাঙ্গুর

গাছের ডালে বসে আছে একটি ছোট্ট লাঙ্গুর

মিয়ানমারে প্রথমদিকের অভিযাত্রীরা এসব নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন, কিন্তু যেগুলো তেমনভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়নি। সেই নমুনা থেকে পাওয়া ডিএনএ বুনো বানরের সঙ্গে যাচাই করে দেখার পর নতুন এই প্রজাতিটি শনাক্ত করেন বিজ্ঞানীরা।

সম্প্রতি মিয়ানমারের এক জঙ্গলে দেখা মিলেছে এই প্রজাতির বানরের

সম্প্রতি মিয়ানমারের এক জঙ্গলে দেখা মিলেছে এই প্রজাতির বানরের

মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলের জঙ্গলে পোপা লাঙ্গুরের এই প্রজাতিটি পাওয়া গেছে। পোপা পর্বতের তীর্থস্থানগুলোর কাছাকাছি অভয়ারণ্যে এদের বেশিরভাগ বসবাস করে। সংরক্ষণবাদী গ্রুপ ফনা অ্যান্ড ফ্লোরা ইন্টারন্যাশনালের ফ্রাঙ্ক মোমবার্গ বলেছেন, বৈজ্ঞানিকভাবে এই বিশ্লেষণ বানরটির সুরক্ষায় কাজে আসবে।

তিনি বিবিসি নিউজকে বলেছেন, সদ্য আবিষ্কৃত পোপা লাঙ্গুর এর মধ্যেই চরম বিপন্ন এবং বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা একটি প্রাণী। সুতরাং তাদের মধ্যে যেগুলো এখনো বেঁচে আছে, সেগুলো রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর নিরাপত্তায় স্থানীয় কমিউনিটির পাশাপাশি প্রাইভেট সেক্টরের সহায়তাও নিতে হবে। এখন এই প্রজাতির ২০০ থেকে ২৫০ প্রাণী বেঁচে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।